6.11.12

লারা লোটাস

'টম ক্রুজ আমার স্বপ্নপুরুষ'
আরটিভিতে নিয়মিত প্রচার হচ্ছে ধারাবাহিক নাটক 'মহল্লার ভাই'। ধারাবাহিকটি পরিচালনা করেছেন আখতারুজ্জামান তুহিন। এতে অভিনয় করেছেন লারা লোটাস। এতে অভিনয় ও সমসাময়িক নানা বিষয়ে কথা হলো তার সঙ্গে-
আশে পাশে হৈচৈ শোনা যাচ্ছে- হ্যাঁ, আমি এখন (গতকাল রাত) জয়দেবপুর শুটিং স্পটে আছি। আমি এখানে গোলাম হাবিব লিটুর পরিচালনায় 'ভরসা কোচিং সেন্টার' নামের একটি ধারাবাহিক নাটকের শুটিং করছি। আমার আশপাশে সহকর্মীরা আলাপচারিতায় মেতে উঠেছেন। তাই একটু শোরগোল শোনা যাচ্ছে। 'ভরসা কোচিং সেন্টার' ধারাবাহিকটি প্রসঙ্গে বলুন- এ নাটকে আমি গ্রাম্য তরুণীর ভূমিকায় অভিনয় করছি। গ্রামের এক যুবক (আ খ ম হাসান) আমার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। কিন্তু আমি ভালোবাসি আরেকজনকে (শতাব্দি ওয়াদুদ)। আপনি অবসরে কী করেন? আমার খুব বেশি অবসর থাকে না। তবে যেদিন আমার অবসর থাকে, সেদিন আমি সাধারণত অনেক বেলা পর্যন্ত ঘুমাই। আর সময় পেলেই প্রচুর সিনেমা দেখি। আপনি নাকি একাধিকবার পরীক্ষা দিয়েও এসএসসি পাস করতে পারেননি? একদম ঠিক বলেছেন। আমি একজন ফেল করা ছাত্রী। আমি কয়েকবার পরীক্ষা দিয়েও এসএসসি পাস করতে পারছি না। বাসায় পড়াতে আসা টিচারদের সঙ্গে প্রেম করি। 'মহল্লার ভাই' শিরোনামের ধারাবাহিকে আমি এমনই একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি। নতুন কোনো ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন কী? বেশকিছু নতুন ধারাবাহিকের শুটিং শুরু করেছি। এর মধ্যে রয়েছে- 'জীবনের রঙ', 'ভরসা কোচিং সেন্টার' ইত্যাদি। প্রচার চলতি ধারাবাহিকের কথা বলুন- এগুলোর মধ্যে রয়েছে, শহিদুজ্জমান সেলিমের 'ডিবি', মামুনুর রশিদের 'পোড়া মাটির গন্ধ', আখতারুজ্জামান তুহিনের 'মহল্লার ভাই', আহমেদ আজীম টিটুর 'আমাদের মহল্লা' ইত্যাদি। 'পোড়ামাটির গল্প' ধারাবাহিকে আপনার চরিত্রটি কী? এ নাটকে কুমোরপাড়ার মধ্যে আমরাই সবচেয়ে ধনী এবং শিক্ষিত পরিবার। আমি কুমোরপাড়ার ভিক্ষুকের ছেলের সঙ্গে প্রেম করছি। বাবা আমার প্রেম মেনে নিতে পারছেন না। আপনার সমসাময়িক অনেক অভিনেত্রী বিয়ে করেছেন; আপনি করছেন কবে? (হেসে) আমার স্বপ্নপুরুষ হলিউড তারকা টম ক্রুজ। তাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সে তো আরেকজনের হয়ে গেছে। তাই আপাতত বিয়ে নিয়ে ভাবছি না। আর বিয়ে করলে রীতিমতো ঢাকঢোল পিটিয়েই করব।
-যায়যায়দিন, নভেম্বর ৬, ২০১২

23.8.10

ফারদিন দিঘী

কেমন আছো তুমি?
খুব ভালো নেই, আম্মু অসুস্থ, তাই মনটা সব সময়ই খারাপ থাকে। জানিনা আম্মু কখন সুস্থ হয়ে উঠবে।
কতদিন হয়ে গেলো আম্মুর সঙ্গে ঘুমোতে পারি না। আম্মু আর আমার সঙ্গে খেলাধুলা করে না, দুষ্টুমী করে না। এখন আম্মু আর আমাকে খাইয়ে দেয় না। কোনো কথা বলে না। শুধুই ঘুমিয়ে থাকে। সবাই বলে আম্মু অসুস্থ। আম্মুর অসুখটা আমাকে কষ্ট দেয়।

এবার ঈদটা কেমন কাটবে?
আমি জানি ঈদের আগেই আম্মু সুস্থ হয়ে উঠবেন। আম্মু সুস্থ হয়ে উঠলেই আমি আম্মু আর আব্বু মিলে খুব মজা করে ঈদ করব, অনেক আনন্দ করব। এই যে এখন আমি রোজা রাখছি, নামাজ পড়ে আম্মুর জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি। গতবছর আম্মু যখন সুস্থ ছিলেন তখন আমাকে বলেছিলেন আগামী বছর থেকে তুমি রোজা রাখবে। আম্মুর কথামতো আমি প্রতিটা রোজাই রাখছি। যত কষ্টই হোক, আম্মুর জন্য আমি সব রোজাই রাখব।

এবারের ঈদে তো তোমার দু'টো চলচ্চিত্র মুক্তি পাচ্ছে, তাই না?
হ্যাঁ, পিএ কাজল আঙ্কেলের 'চাচ্চু আমার চাচ্চু' এবং মনতাজুর রহমান আকবর আঙ্কেলের 'রিকশাওয়ালার ছেলে'।

এ দু'টো চলচ্চিত্রে তোমার নিজের অভিনয় কেমন লেগেছে?
খুব ভালো, 'রিকশাওয়ালার ছেলে'তে আমি ডিপজল আঙ্কেলের সহকর্মী এবং 'চাচ্চু আমার চাচ্চু'তে শকিব খান আমার চাচ্চুর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। চলচ্চিত্র দু'টোরই প্রধান চরিত্রে আমি অভিনয় করেছি?

তুমিতো জাতীয় পুরস্কার পেয়েছ, কেমন লেগেছে?
হ্যাঁ, ভালো লেগেছে। প্রথম পুরস্কার পেলাম আমার প্রথম অভিনীত 'কাবুলিওয়ালা' এবং দ্বিতীয়টি '১ টাকার বউ' চলচ্চিত্রের জন্য। কাবুলিওয়ালার জন্য যখন পুরস্কার পেয়েছিলাম তখন আমি অনেক ছোট্ট; জাতীয় পুরস্কার কি তা বুঝতাম না। আম্মুর কোলে চড়ে পুরস্কার আনতে গিয়েছিলাম। আম্মু বলেছিলেন বড় হলে বুঝতে পারবে জাতীয় পুরস্কারের অর্থ। এরপর '১ টাকা বউ'য়ের যখন পেলাম তখন বুঝেছি এই পুরস্কারটি আসলে কি। রাষ্ট্রের দেওয়া সম্মান। কিন্তু দুঃখ লাগছে আম্মু তখন আমার পাশে ছিলেন না। তিনি অসুস্থ, হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছেন। আমি পুরস্কারের ট্রফিটি হাতে নিয়ে ছুটে গিয়েছি আম্মুর কাছে। তার কানে কানে বলেছি আম্মু দেখো আমি আবার রাষ্ট্রীয় সম্মান পেয়েছি।

এখন তোমার সময় কিভাবে কাটে?
আম্মুকে ছাড়া সময় একেবারেই কাটতে চায় না। কি করব, কম্পিউটার নিয়ে, টিভিতে কার্টুন দেখে আর ছবি এঁকে সময়টা কোনোভাবে কাটিয়ে দেই। ছবি আঁকাটা আমার প্রিয় শখ। আব্বু ও বড় ভাইকে যখন বাসায় পাই তাদের সঙ্গেই খেলাধুলা করি। আম্মুর সঙ্গে সঙ্গে আব্বুও আমার খুব প্রিয়। আম্মু অসুস্থ হওয়ার পর থেকে আমি আব্বুর সঙ্গেই ঘুমাই।

কোথায় পড়াশোনা করছ?
আমি এখন ধানমণ্ডির স্কলার স্কুল এন্ড কলেজে স্টান্ডার্ড ওয়ানে পড়ছি।

অভিনয়ের জন্য পড়ালেখার অসুবিধা হয় না?
একটু তো হয়, কি করব আম্মুতো অসুস্থ, আম্মুকে সারিয়ে তুলতে অনেক টাকার দরকার। আব্বুতো অনেক কষ্ট করছেন। আব্বুর একার পক্ষে কি এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব। আম্মুকে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে তুলতে আমিও একটু কষ্ট করছি।

বড় হয়ে কি হতে চাও?
ডাক্তার হব, আম্মুকে ভালো করে তুলব।
-আলাউদ্দীন মজিদ

22.7.10

জাকিয়া বারী মম

লাক্স-চ্যানেল আই প্ল্যাটফর্মের সুপারস্টার এই তারকা টিভি নাটকে দারুণ ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তার সঙ্গে আজ টেলিফোনে কিছুক্ষণ বিভাগে কথা বলে আলাপচারিতার চুম্বক অংশ তুলে ধরেছেন সৈয়দ নূর-ই-আলম

কেমন আছেন ও কোথায় আছেন এই মুহূর্তে?
ভাল আছি। এই মুহূর্তে উত্তরায় আছি এজাজ মুন্নার পরিাচলনায় এনটিভিতে প্রচার চলতি ধারাবাহিক ‘ধূপছায়া’ নাটকের শুটিংয়ে আছি।
নাটকটি সম্পর্কে একটু বলুন?
এই মুহূর্তে আমার আর মিলনের সংসারে ঝামেলা হচ্ছে। ঝামেলাটা শুরু হয়েছিল আমাদের আমার বড় ভাইয়ের অনেকদিন পর বাবা-মা’র কাছে ফিরে আসাকে কেন্দ্র করে। বলতে পারেন এখন আমার আর মিলনের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ চলছে।
চরিত্রটিতে দর্শক সাড়া কেমন পাচ্ছেন?
পরিবারের নানা সঙ্কটের উপর ভিত্তি করে নাটকের কাহিনী তৈরি হয়েছে। নাটকের অন্যতম একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি। তাই এ নাটকের দর্শক সাড়া একটু বেশি।
বিভিন্ন চ্যানেলে এখন কোন কোন নাটক প্রচারিত হচ্ছে?
দেশ টিভিতে হুমায়ুন ফরিদীর পরিচালনায় ধারাবাহিক নাটক ‘অনুভূমি’, মোশারেফ খান বাদলের পরিচালনায় ‘শুভ্র’ ও আরটিভিতে আশুতোষ সুজনের পরিচালনায় ‘ম্যানপাওয়ার’ নাটক প্রচারিত হচ্ছে। এছাড়া শুটিং চলছে মারুফ মিঠুর ‘এম্পটি পকেট’, মোহনী মানিকের ‘যত দূরে থাক না কেন দেখা হবে’ ও বিপুল রায়হানের একটি নাটকের শুটিং করছি।
ঈদের কাজের খবর বলুন?
সামনে অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা এবারে ঈদের কাজ একটু কম করবো। এবারে ঈদের জন্য রোকেয়া প্রাচীর ‘বৃষ্টির ঘ্রাণ’, ‘ নজরুলের ‘ঘটনা যখন ঘটে’, রাজু খানের ‘চুরি এবং চোর অথবা একটি রূপকথা’ মিল্টন সরকারের ‘নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি’ ও বিপুল রায়হানের দু’টি ও কিশোর মাহমুদের একটি নাটকের কাজ করছি।
সংসার কেমন চলছে?
ভালই চলছে। যেহেতু আমরা একই অঙ্গনের লোক তাই একে অন্যকে বুঝে চলছি। এক কথায় সুখে শান্তিতে আছি।

8.11.09

ভাল স্ক্রিপ্ট পেলে চলচ্চিত্রে নিয়মিত হবেন আজমেরী হক বাঁধন

কোথায় আছেন এখন?
বাসাতেই আছি। বসে বসে বই পড়ছি।

পরীক্ষা শেষ। এখন পড়াশোনা কিসের?

পরীক্ষা শেষ তবে ইন্টার্নি বাকি আছে। তাই একটু পড়াশোনা করছি।


'রঙ' ধারাবাহিকে কালো বর পছন্দ সম্পর্কে বলুন?

নাটকের পরবর্তী পর্বগুলো কি হবে তা এখন বলতে পারছি না। তবে নাটকটা খুবই মজার, আমার নাম বাঁধন, আমি অনেক সুন্দরী। হাসান মাসুদ আমাকে দেখতে গিয়ে পছন্দ করে। আমিও তাকে পছন্দ করি। কিন্তু তার মনে সন্দেহ জাগে, এত সুন্দরী হয়েও আমি তার মতো কালো ছেলেকে কেন পছন্দ করলাম। এই নিয়ে শুরু হয় ঝামেলা।


বাস্তবেও কি কালো ছেলে পছন্দ করেন?

আসলে কালো ও সুন্দর দুটোই আল্লাহর দান। তবে কেন জানি পৃথিবীর বেশির ভাগ সুন্দরী মেয়েদের ভাগ্যে অসুন্দর ছেলের দেখা মেলে। আমার কাজিনরা প্রত্যেকেই খুব সুন্দরী। অথচ প্রত্যেকের স্বামীই কালো, আর এসব কালো ছেলেদের মনে সব সময় একটা সন্দেহ কাজ করে। তা হচ্ছে, এত সুন্দরী মেয়ে কেন আমাকে পছন্দ করল।


ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় পছন্দ করেন না। তাহলে রঙ নাটকে অভিনয় করলেন কেন?

বর্তমানে বাইশটি টিভি চ্যানেল হয়েছে। তারপরেও প্রায় প্রতিটি চ্যানেলেই দেখা যায় একই মুখ। বিষয়টা আমার কাছে ভাল লাগে না। তাই ধারাবাহিকে কাজ করি না। তবে ১টা কিংবা ২টা ধারাবাহিকে হয়তো অভিনয় করা যায়।


নিঝুম অরণ্যে'তে অভিনয় করার পর আর কোন চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন না কেন?

আসলে ব্যাটে বলে মিলছে না। মাঝে অনেক ভাল ভাল ছবিতে অভিনয় করার জন্য অফার পেয়েছি। কিন্তু পরীক্ষার কারণে করা হয়নি। এখন যেরকম কাহিনী চাচ্ছি সেরকম পাচ্ছি না। তাই ছবিতে অভিনয় করা হচ্ছে না। ভাল স্ক্রিপ্ট পেলে চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয় করব।


ঈদের কোন নাটকে অভিনয় করছেন কী?

চয়নিকা চৌধুরীর ঈদের নাটক 'ভালো থেকো ভালো রেখো'তে অভিনয় করেছি। নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুলের একটি ঈদের নাটকে অভিনয় করব। এছাড়া আরও ২/১টি নাটকে অভিনয় করব।

24.10.09

Suborna Mustafa

নাটকে কাজ করার সময়গুলো উপভোগ করেছিলাম

এটিএন বাংলায় প্রচার হচ্ছে ধারাবাহিক নাটক ‘কারো কোনো নীতি নাই’। রচনা ও পরিচালনা করেছেন সাইফুল ইসলাম মান্নু। এখানে অভিনয় করেছেন সুবর্ণা মুস্তাফা। কথা হলো তাঁর সঙ্গে।
শুটিং করছেন?
হ্যাঁ। আমরা এসেছি ঢাকা থেকে একটু দূরে, একটি গ্রামে। এখানে বদরুল আনাম সৌদের লেখা ও পরিচালনায় একটি নাটকের কাজ করছি। নাম সীমান্ত। বেশ কিছুদিন থেকেই এখানে আমরা কাজ করছি। এ মাসের শেষ দিন পর্যন্ত এখানে কাজটা হবে। দেশ টিভিতে প্রচারিত হবে নাটকটি।
কাজ করতে কেমন লাগছে?
আসলে অন্য নাটকের শুটিংয়ে আমরা মাঝেমধ্যেই আড্ডা দেওয়ার সময় পাই। কিন্তু এখানে সেই সুযোগ নেই। কারণ, নাটকের সংলাপগুলো ময়মনসিংহের আঞ্চলিক ভাষায়। সংলাপগুলো ঠিকভাবে বলার জন্য একটি দৃশ্যের কাজ করার পরই সবাই নিজের পাণ্ডুলিপিতে চোখ বোলাতে থাকে। ফলে কাজের বাইরে অন্য কিছু করার কিংবা ভাববার সুযোগ নেই।
গত ঈদে তো আপনার অভিনীত অনেকগুলো নাটক প্রচারিত হয়েছে। নাটক নির্মাণও করেছিলেন। এবার ঈদে সে রকম কিছু করছেন?
এবার ঈদে কোনো নাটক পরিচালনা করতে হয়তো পারব না। কারণ, আমি ধারাবাহিক নাটকের শুটিং নিয়ে ব্যস্ত আছি। হয়তো আমার অভিনীত নাটক ঈদের অনুষ্ঠানমালায় প্রচারিত হবে দু-তিনটি। বেশি কাজও করি না। ভালো কাজ পেলে সেগুলো করি।
আপনার নিজের কাজগুলো দেখার সুযোগ পান?
সব সময় পাই না। ডলস হাউস ধারাবাহিকটা রাত সাড়ে ১১টায় প্রচারিত হতো। তখন দেখতাম। কিন্তু এখন যে সময় অন্য নাটকগুলো প্রচারিত হয়, সেটা দেখা কঠিন। ঈদে দু-একটা নাটক যাও দেখার চেষ্টা করেছি, কিন্তু এত বেশি বিজ্ঞাপনের চাপ থাকে যে নাটক দেখার মতো ধৈর্য থাকে না। যেমন, এবার ঈদে দেখলাম, আমারই একটি ৪০ মিনিটের নাটকে আরও ৪০ মিনিট বিজ্ঞাপনচিত্র দেখানো হচ্ছে। আমি বুঝি না—এ অবস্থায় কীভাবে মানুষ নাটক দেখে! সে ক্ষেত্রে বিকল্প উপায় কী বলে মনে করেন?
টিভি চ্যানেল কর্তৃপক্ষ ভালোভাবেই জানে যে ঈদের সময় বিজ্ঞাপনচিত্রের চাপ থাকে। তাই সে সময় যদি তারা বিজ্ঞাপন সময়ের মূল্য দ্বিগুণ করে দেয়, তবে কিন্তু বেশি বিজ্ঞাপন প্রচার না করেও ভালোভাবেই একটি নাটক বা অনুষ্ঠান প্রচার করতে পারে। কারো কোনো নীতি নাই নাটকটি নিয়ে কিছু বলবেন?
নাটকটিতে আমরা অনেক শিল্পী একসঙ্গে কাজ করেছিলাম। মনে আছে, শুটিংয়ের সময় ফেরদৌসী মজুমদার আপা তেঁতুল ও লেবু দিয়ে কাঁচকলার ভর্তা বানিয়ে আনতেন। জীবনে প্রথম সেদিন কাঁচকলার ভর্তা খেয়েছিলাম। ওই নাটকে কাজ করার সময়গুলো খুব উপভোগ করেছিলাম।
সূত্র: প্রথম আলো

4.6.09

Joya & Foysal together after 5 years..


প্রায় পাঁচ বছর পর তারকা-দম্পতি ফয়সাল-জয়া একটি বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হয়েছেন। বিজ্ঞাপনে এই তারকা দম্পতির নজরকাড়া উপস্থিতি দর্শক মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ফয়সাল-জয়ার প্রাণবন্ত কথামালা নিয়ে লিখেছেন অনুরূপ আইচ ও নিপু বড়-য়া শুনেছিনু প্রেমের পাথার নাইকো তাহার কোন দিশা_ শুনেছিনু প্রেমের মধ্যে অসীম ক্ষুধা, অসীম তৃষ্ণা, বীণার তন্ত্রী কঠিন টানে ছিঁড়ে পড়ে প্রেমের তানে, শুনেছিনু প্রেমের কুঞ্জে অনেক বাঁকা গলিঘুঁজি। আমাদের এই দোঁহার মিলন নিতান্তই এ সোজাসুজি।। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'সোজাসুজি' কবিতার এই পঙ্ক্তিগুলোর মতোই ফয়সাল-জয়ার সম্পর্কটাও পুরোদমে সোজাসুজি। তবুও তাদের নিয়ে ভক্তদের কৌতূহলের অন্ত নেই। প্রথমে আলাদা করে বলি। ১৯৯৪ সালে রাজনীতি নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন ফয়সাল। সে সময় বন্ধু পল্লব (মডেল-অভিনেতা) প্রায়ই তাকে মডেলিং করার অনুরোধ করত। একদিন পল্লবের সঙ্গে দেখে আফজাল হোসেন মডেলিং করার জন্য অফার করলেন ফয়সালকে। ব্যাস, শুরু হল পথচলা। তারপর এলিট পেইন্ট, কোকাকোলার বিজ্ঞাপন করেই রাতারাতি তারকা বনে যান ফয়সাল। মজার ব্যাপার হচ্ছে, জয়াও মডেল হিসেবে আত্দপ্রকাশ করেছিলেন কোকাকোলার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে। তারপর '৯৫ সালে 'পঞ্চমী' নাটকের মাধ্যমে অভিনেত্রী হিসেবেও আত্দপ্রকাশ। সেই থেকে আজ অবধি চলছে পথচলা। সম্প্রতি দেশের সবকটি টিভি চ্যানেলে প্রচার হচ্ছে তারকাদম্পতি ফয়সাল ও জয়ার নতুন বিজ্ঞাপন। দীর্ঘদিন পর একসঙ্গে কাজ করলেন, অনুভূতিটা কেমন- জানতে চাওয়া হলে ফয়সাল বলেন, 'আমি এমনিতেই কম কাজ করি। আর জয়ার সঙ্গে কাজ করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। কাজটি ভালো হয়েছে।' ফয়সালের কথায় সুর মিলিয়ে জয়া বলেন, 'ফয়সাল একজন ভালো মডেল-অভিনেতা। ওর সঙ্গে কাজ করে আমারও ভালো লেগেছে এবং অনেকেই বলেছেন কাজটি ভালো হয়েছে।' জয়ার মুখে নিজের প্রশংসা শুনে ফয়সাল কিছুটা লজ্জাই পেলেন মনে হয়। বললেন, 'ও কিন্তু একটু বাড়িয়ে বলছে।' জয়া অবশ্য তার কথায় অনড়- 'মোটেই না, যা সত্যি তাই বলছি।' 'তবে জয়া খুবই স্পষ্টবাদী এই কারণে তাকে আমার বেশি ভালো লাগে' বললেন ফয়সাল। এ প্রসঙ্গে তারা ঝিলমিলের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হল_ আপনাদের মাঝে প্রথম ভালোলাগা সৃষ্টি হয় কীভাবে? ফয়সাল বললেন, "ঘটনাটা আমিই বলি। একদিন এক বন্ধুর বাসায় পত্রিকা পড়তে গিয়ে একটি ফ্যাশন শো'র ছবি চোখে পড়ে। আর এই ছবিতে মডেল ছিল জয়া। তখনও আমি তাকে চিনতাম না। কিন্তু ওর ছবি দেখেই ভালো লেগে যায়। এরপর একদিন হঠাৎ করেই আফজাল ভাইয়ের অ্যাড ফার্ম 'মাত্রা'য় আমাদের প্রথম সাক্ষাৎ হয়। পরিচয় সেখানেই। তারপর মাঝে মাঝে আমাদের কথা হতো। সে এত সুন্দর গুছিয়ে কথা বলত, আমি মুগ্ধ হতাম। এভাবেই ভালোলাগা থেকে ভালবাসার শুরু। পরিচয়ের দু'মাস পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলাম। বিয়ের তারিখটা হচ্ছে ১৪ মে।" ফয়সালের মুখে স্মৃতিচারণ শুনে জয়া হেসে বললেন, "ফয়সালের সরলতা, ব্যক্তিত্ব, বিনয়, সর্বোপরি আমার প্রতি মূল্যায়ন আমাকে আকৃষ্ট করেছিল। সে থেকে আমাদের সুখের সংসার আজোবধি চলছে।" প্রায় এক যুগ পার হতে চলছে ফয়সাল-জয়া'র দাম্পত্য জীবন। বিবাহিত জীবনে এই তারকা-দম্পতি খুবই সুখী। ভালবাসা আর খুনসুটি করেই কেটে যায় তাদের দিন-রাত্রি। বিয়ের পরের জীবন সম্পর্কে জানতে চাইলে ফয়সাল বলেন, 'অন্যসব সাধারণ মানুষের মতোই আমরা আমাদের সংসার চালিয়ে যাচ্ছি। বেশ ভালোই চলছে।' হাস্যোজ্জ্বল মুখে জয়া জানান দিলেন, 'হঁ্যা ভালোই যাচ্ছে।' মাঝে একটি টেলিকমের বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে জয়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, এমন খবরে দেশজুড়ে জয়ার ভক্তরা উদ্বিগ্ন ছিলেন। সেই সময়ের কথা জানাতে গিয়ে জয়া বলেন, "বিজ্ঞাপনের কনসেপ্টটা ছিল নতুন। তাছাড়া পত্রিকায় বিষয়টি উল্লেখ ছিল। পরিচিত মহল থেকে প্রচুর ফোন এসেছে। ভক্তরা আমাকে কত যে ভালবাসেন তার প্রমাণ মিলেছে ওই ঘটনায়। এই জন্য আমি দুঃখিত। ফয়সাল বলেন, সেই সময় আমার কাছে সবাই জানতে চায় কোথায় হারিয়েছে জয়া! কোথায় গেল! সবাইকে বিষয়টি খুলে বলতে বলতে আমি টায়ার্ড। ওর জনপ্রিয়তা কতটুকু সেদিনই বুঝতে পেরেছি। একে অপরের কাজের প্রতি মূল্যায়ন করতে গিয়ে ফয়সাল যেন ভাবনার অথৈ জলে পড়ে গেলেন। পরক্ষণে তিনি বলেন, জয়া কাজের প্রতি খুব সচেতন। ওর কাজ দেখে আমি আরও অনেক আশাবাদী। জয়া স্মিত হেসে বলেন, ওর কাজ দর্শকরাই মূল্যায়ন করবে। তবে আমি একজন অভিনেত্রী হিসেবে ওর কাজের প্রতি সন্তুষ্ট।' দুজনই কাজের প্রতি বেশ সচেতন। বেছে বেছে কাজ করেন। তারা মনে করেন অল্প কাজ করেও বেশিদিন ইমেজ ধরে রাখা যায়। সংসার আর অভিনয় কিভাবে সামলান? প্রশ্নের উত্তরে জয়া বলেন, 'আমার দুটো সামলাতে তেমন কোনও সমস্যা হয় না। অভিনয় চলে তার নিজস্ব গতিতে। আর সংসার সামলাতে ফয়সাল আমাকে যথেষ্ট সাহায্য করে। ব্যস্ততার কারণে আমি যে কাজগুলো মিস করি, ও সেটা ম্যানেজ করে। দুটোকেই আমি সমানভাবে মিস করি। 'আসলে সংসার ঠিক তো সব ঠিক। দুজন সংসারের সবকিছু শেয়ার করি। আমি ব্যবসা নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকি। পছন্দ হলে কাজ করি। কাজের ফাঁকে সংসারে জয়াকে সময় দেই।' জানালেন ফয়সাল। ক্যারিয়ারের লম্বা সময় অতিবাহিত করে আজও নিজের অবস্থান ধরে রেখেছেন দু'জনে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা প্রায় সমস্বরে বলেন, "ভালো কিছু কাজ করতে চাই আরও। আর সেলিব্রেটি ইমেজ কাজে লাগিয়ে মানুষের জন্য কল্যাণকর কিছু করতে চাই।' আপনারা দু'জন একসঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে কোনও মজার ঘটনা ঘটেছে কি? এই প্রশ্নের উত্তরে হাসতে হাসতে জয়া বলেন, 'ও যখন শট দিচ্ছিল আমার তাকানো নিষেধ ছিল। আমার ক্ষেত্রেও তাই। দুজনের চোখাচোখি হলেই ভীষণ হাসি পেত আর অভিনয় কোথায় পালায়। একদিন একটা শট ও খুব ভালো করছিল। আমি আনমনা হয়ে অনেক্ষণ দেখছিলাম। হঠাৎ আমার দিকে তাকাতেই দেখি ও আমাকে অন্যদিকে তাকানোর জন্য চোখ রাঙাচ্ছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে চোখ ঘুরিয়ে নিই। এটি ছিল আমাদের মজার অভিজ্ঞতা।' ফয়সাল বলেন, এসব কথা মনে উঠলে এখন মাঝে মাঝে হাসি পায়।' সম্প্রতি জয়া মাসুদ হাসান উজ্জ্বলের কাগজ ও কার্বনের সম্মোহন, সুমন আনোয়ারের 'পাঞ্জাবিওয়ালা', 'কেউ নয় শূন্যতা', তানভীর হোসেন প্রবালের 'টাইপরাইটার'সহ বেশ কটি একক নাটকের কাজ করছেন। পাশাপাশি মেজবাউর রহমান সুমনের 'মিথ্যা তুমি দশ পিঁপড়া' নামে একটি ধারাবাহিকের কাজ শুরু করবেন। খুব শিগগিরই তার নতুন একটি বিজ্ঞাপন প্রচারের অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়া তিনি 'ডুবসাঁতার' ও 'বেহুলা লক্ষ্মীন্দর' নামে ডিজিটাল ফিল্মেরও কাজও শেষ করেছেন। এর আগেও ফয়সাল বেশ কটি বিজ্ঞাপনে কাজ করে নন্দিত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি বনানীতে 'ক্রসরোড' নামে একটি ফ্যাশন হাউজ খুলেছেন। আপাতত ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। পর্দার বাইরেও এখন এই জুটি একজন অন্যজনের দু'জনের ছোট্ট সংসারে শুধুই ভালবাসা আর ভালবাসা। তাই বাকি জীবনেও তাদের একমাত্র প্রত্যাশা- ভালোবাসার কখনও যেন অবমূল্যায়ন না হয়।

12.4.09

Asaduzzaman Nur

এলাকা নয়, আমি সারা দেশকে নিয়ে ভাবি: আসাদুজ্জামান নূর

nur22-1203.jpgপ্রখ্যাত অভিনেতা, পরিচালক ও আবৃত্তিকার আসাদুজ্জামান নূর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের টিকেটে নির্বাচন করছেন নীলফামারী-২ (সদর) আসনে। নূর এর আগের অর্থাৎ '০১ সালের নির্বাচনে এই আসনের এমপি হিসেবে সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনিই বাংলাদেশের একমাত্র সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব যিনি সংসদ সদস্য হয়েছেন। এবার থাকছে এই তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতার একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার। যেখানে সামপ্রতিক বিষয়সহ, সংস্কৃতি অঙ্গনের নানা সমস্যা সমাধানে তিনি নিজের অভিমত ব্যক্ত করেছেন, নির্বাচন নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন। জানিয়েছেন আরো নানা প্রসঙ্গে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি। গ্লিটজের পক্ষে সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকমের নীলফামারী প্রতিনিধি আতিয়ার রহমান বাড্ডা।


গ্লিটজ : আপনার নির্বাচনী প্রচারনা কেমন চলছে?
নুর : সময়স্বল্পতার কারণে নির্বাচনী প্রচারণায় প্রচন্ড চাপ চলছে। সদর আসনে ১৫টি ইউনিয়ন ১টি পৌরসভা। এতো বড় এলাকা ১৫ দিনে কভার করা শারীরিকভাবে এবং সময়ের দিক থেকে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আমাদের দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এবং বিশেষ করে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা একসঙ্গে কাজ করছেন। ফলে আমার মনে হচ্ছে, প্রচার আশানুরূপ হচ্ছে।

গ্লিটজ : নিজের প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীদের মূল্যায়ন করুন।
নূর : প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী বলতে এখানে মূলতঃ চারদলীয় ঐক্যজোটের প্রার্থী (জামায়াতের কর্মী, চারদলীয় ঐক্যজোটের প্রার্থী মনিরুজ্জামান মন্টু, তার প্রতীক ধানের শীষ) । তিনি তার মত প্রচারণা করছেন। আমরাও আমাদের মতো প্রচারণা করছি। বক্তব্য তুলে ধরছি। বাকীটা ভোটারদের উপর।

গ্লিটজ : কোন কোন বিষয়কে সামনে রেখে ভোট প্রার্থনা করছেন?
নূর : আমাদের এলাকার উন্নয়নকে সামনে রেখে ভোট প্রার্থনা করছি। তবে একজন সংসদ সদস্য হিসেবে আমি শুধু নিজ এলাকাকে নিয়ে ভাবতে পারি না। আমি সারা দেশকে নিয়ে ভাবি। সারা দেশের যদি উন্নয়ন না হয় তাহলে বিচ্ছিন্নভাবে নীলফামারীর পরিবর্তন আসবে না। আমাদের এলাকার সমস্যা- যেমন ইপিজেড, দারোয়ানী টেক্সটাইলস মিলস, চিলাহাটী স্থলবন্দর, নার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউট, পলিটেকনিক কলেজ, মহাসড়কের উন্নয়ন, মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা, চাল-ডাল-তেলের দাম বিশেষ করে সারের সমস্যার বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে দেখছি। আগামীতে মহাজোট ক্ষমতায় এলে এই সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করব।

nur22-12.jpgগ্লিটজ : একজন তারকা হিসেবে ভোটাররা আপনাকে কীভাবে দেখছেন?
নুর : আমার এলাকার ভোটাররা ঠিক তারকা হিসেবে আমাকে দেখেন না। তবে নবীন প্রজন্মের কাছে কিছুটা গুরুত্ব থাকলেও থাকতে পারে। তবে গ্রামগঞ্জের সাধারণ মানুষের কাছে তারকা হিসেবে আমার কোনো আবেদন নেই। তারা আমাকে একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবেই দেখেন। অভিনেতার ইমেজটা খুব বেশী বড় হয়ে এখানে দেখা দেবে না।

গ্লিটজ : নির্বাচিত হলে কী কী উন্নয়ন করবেন?
নুর : উন্নয়নের কথা আমি আগেই বলেছি। তবে স্থানীয়ভাবে কিছু উন্নয়নের ব্যাপার রয়েছে। এর মধ্যে ইপিজেড'র সমপ্রসারণ, চিলাহাটী স্থলবন্দর চালু, কৃষিভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করা- এই সমস্যাগুলো সমাধানের দিকে আমরা দৃষ্টি দেব। এছাড়াও প্রণয়ন করতে হবে জাতীয় নীতি। এমন জাতীয় নীতি প্রনয়ণ করতে হবে যাতে স্বাভাবিক নিয়মেই দেশের সব অঞ্চলেই উন্নয়ন হয়।

গ্লিটজ : দেশে এখন তেমন সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালিত হয় না। নির্বাচিত হলে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমকে কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবেন?
নূর : দেশের সর্বত্র সাংস্কৃতিক কার্যক্রম অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে। যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট নির্বাচনে তাদের বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছে। তারা তাদের মতো সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে এই কাজটি করছে। এই দেশের সাংস্কৃতিক কর্মীরা সবসময়েই সচেতন। যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতীয়তাবাদ, ইতিহাস, ঐতিহ্য বিশ্বাস করে সেই সরকারের উচিত হবে আগামীতে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডকে আরও অনেক বেশী সক্রিয় করা। nur22-121..jpg

গ্লিটজ : বিশেষ করে মফস্বলে মঞ্চ নাটকে আগের মতো শো করার অবস্থা নেই। এক্ষেত্রে আপনার ভূমিকা কী হবে?
নূর : মঞ্চ নাটকের ব্যাপারে বলতে গেলে আমি অনেকটা হতাশ। ছা‌ত্র সংগঠন-যুব সংগঠনে যারা আছেন তারা অনেক বেশী পরিশ্রম করেন। তবে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে আমরা ওইভাবে সংগঠন গড়ে তুলতে পারিনি।

গ্লিটজ : চলচ্চিত্র শিল্পের দৈন্যদশা কাটাতে আপনার ভূমিকা কি হবে ?
নূর : ব্যক্তিগতভাবে মতামত দিতে গেলে বলতে চাই, চলচ্চিত্রে পরিবর্তনের ধারা সুচিত হয়েছে। তবে ধারাটি অত্যন্ত দূর্বল। এতে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। সেটি পেলে পরে আমার ধারণা বাংলাদেশে চলচ্চিত্রের একটা পরিবর্তন আসবে। এটি হোক তা আমি আন্তরিকভাবে চাই।

গ্লিটজ : অসুস্থ ছবি বন্ধে আপনার ভূমিকা কী হবে?
নূর : যে কোন মুল্যে অসুস্থ ছবি বন্ধ করতে হবে। এটি একটি অপসংস্কৃতি।

গ্লিটজ : কেন সক্রিয় রাজনীতিতে এসেছেন?
নূর : আমি নির্দ্বিধায় বলতে চাই, আমি এই এলাকার মানুষ ও মাটির কাছে ঋনী। আমি রাজনীতির মধ্য দিয়ে, সেবার মধ্য দিয়ে সেই ঋনের কিছুটা হলেও শোধ করতে চাই। এছাড়াও একজন সচেতন মানুষ হিসেবে আমি যেটা মনে করি রাজনীতি না করে আসলে দেশের মৌলিক পরিবর্তনগুলো আনা সম্ভব নয়। দেশের মৌলিক পরিবর্তনগুলোই মূল প্রয়োজন। এতে জনগনের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। এই পরিবর্তন আনার লক্ষেই আমার রাজনীতিতে আসা।

গ্লিটজ : একজন সাংস্কৃতিক কর্মীর রাজনীতি করাটা কতটা জরুরী? কেন?
নূর : এটা ঠিক ব্যাখ্যা দেয়া যাবে না যে, একজন সাংস্কৃতিক কর্মী রাজনীতি করবে কী না। একজন সাংবাদিক রাজনীতি করতে পারবে কী না। একজন আইনজীবী রাজনীতি করতে পারবে কী না। তবে আমি মনে করি, যে কোন পেশার মানুষই রাজনীতি করতে পারেন। যে কোন সচেতন মানুষেরই রাজনীতির ব্যাপারে আগ্রহী হওয়া উচিত।

গ্লিটজ : সিনেমা হলগুলো একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা কাটাতে আপনি সরকার এবং দলকে কীভাবে প্রভাবিত করবেন? এক্ষেত্রে আপনি নিজে কী ভূমিকা রাখবেন?
নূর : সিনেমা হলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে- এটি একটি হতাশাজনক অবস্থা। এক্ষেত্রে সিনেমা হলগুলোর আধুনিকায়ন দরকার। আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত উদ্যোগটাই সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন। আমার মনে হয় না যে, সিনেমা হল আধুনিকায়ন করার ক্ষেত্রে সরকারের কোন কিছু করার আছে। তবে ভালো ছবি যদি হয় তাহলে দর্শক সিনেমা হলে যায়। সুতরাং ভালো ছবি ও সুস্থ ধারার ছবি নির্মাণ করতে হবে। আজকাল তো যে কোন ছবি ভিডিও'তে দেখা যায়। দর্শক তো আর ওইসব ছবি দেখতে হলে যেতে চায় না। যদি ভালো ছবি হয়, এতে বড় পর্দায় ছবি দেখার যে আনন্দ আছে, সেটি দেখার জন্য অনেকেই হলে যায়।

গ্লিটজ : দেশে দিনে মৌলবাদ বেড়ে যাচ্ছে, সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চা হুমকির মুখে। কেন এই অবস্থা হচ্ছে? এই অবস্থা কাটাতে কী করা প্রয়োজন? এক্ষেত্রে আপনার ভূমিকা কী থাকবে?
নূর : মৌলবাদ, অসামপ্রদায়িক শক্তির কর্মকান্ড দেশে বেড়ে যাচ্ছে। এর মূল কারণটাই হলো- অভাব, দারিদ্র এবং শিক্ষাহীনতা। এসবের কারণে মৌলবাদ বেড়ে যাচ্ছে। যদি অভাব দূর হয়, মানুষ শিক্ষিত হয়, তাহলে মানুষ সচেতন হয়ে উঠবে। ফলে আর ধর্মান্ধ গোষ্ঠী মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারবে না।

গ্লিটজ : এমপি নির্বাচিত হলে আপনি সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে এদেশের সাংস্কৃতিক জগতের জন্য কী করবেন ?
নূর : যদি আমি এমপি নির্বাচিত হই তাহলে সুস্থ সংস্কৃতির ধারা প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ নেব।

গ্লিটজ : দেশে এবারে নির্বাচন কেন গুরুত্বপূর্ণ? দল ক্ষমতায় গেলে সাংস্কৃতিক জগতের জন্য কী করবেন ?
নূর : আমাদের দেশে এবারের নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় আমরা দুঃশাসনের মধ্যে ছিলাম। রাজনৈতিকভাবে আমরা হামলা-মামলার শিকার হয়েছি প্রতিনিয়ত। দেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিগুলো বার বার ধর্মান্ধ শক্তির হামলার শিকার হয়েছে। গ্রেনেড হামলা হয়েছে, বোমা হামলা হয়েছে এবং সাধারণভাবে মানুষের জীবনে অর্থনৈতিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। চালের দাম বেড়েছে। মানুষ স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে পারছেন না। এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। ওয়ান ইলেভেনের পর একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘঠেছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য এই নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ।

গ্লিটজ : আগের আওয়ামী লীগের তুলনায় এবারের আওয়ামী লীগের পার্থক্য কোথায়? কেন মানুষ অন্য দলকে ভোট না দিয়ে আওয়ামী লীগকে ভোট দেবেন?
নূর : এ দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব দিয়েছে। '৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার জন্য নানান ধরনের ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু সেটি সম্ভব হয়নি। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ দিনে দিনে শক্তিশালী হয়েছে। এখন মানুষ উপলব্ধি করছে- আওয়ামী লীগের ওই পাঁচটি বছরই ছিল স্বাধীনতার পরে শ্রেষ্ঠ ও ইতিবাচক সময়। আমরা এ কথা বলি না যে, আমরা সব সমস্যার সমাধান করে ফেলেছি এবং সেটি একটি স্বর্ণযুগ। তবে যা কিছু ইতিবাচক ঘটনা ঘটেছে ওই সময়টার মধ্যেই সেগুলো হয়েছে। আমাদের কিছু কিছু ব্যর্থতা থাকলেও থাকতে পারে এবং সেখান থেকে আওয়ামী লীগের নতুন নতুন পথে উত্তরণ ঘটেছে। এসেছে নবীন ও নতুন নেতৃত্ব। এবার আওয়ামী লীগ মহাজোট করেছে। একটা ঐক্য গড়েছে। সেই ঐক্যে মুক্তিযুদ্ধের পরে সমস্ত শক্তিগুলো যারা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ চায়, সেই শক্তিগুলো আজকে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং ভালো ভূমিকা পালন করেছে। সবকিছু মিলে আগের তুলনায় আওয়ামী লীগের ভূমিকা কিন্তু ভিন্ন।

গ্লিটজ : একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে আপনার ভূমিকা কী হবে?
নূর : মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন বলতে আমার মনে হয়, এমন একটি দেশ যেটি হবে অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের। সেই বাংলাদেশ হবে শোষনমুক্ত ও সামাজিক ন্যায়বিচার সম্পন্ন। যেখানে অর্থনৈতিক ভারসাম্য থাকবে। এদেশের খেটে খাওয়া মেহনতী মানুষ সম্মানের জীবন পাবে। সব পরিবারের ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়ার সুযোগ পাবে। আর যারা লেখাপড়া শিখেছে তারা চাকুরীর সুযোগ পাবে। সেই দেশে অসুস্থ হলে মানুষ চিকিৎসার সুযোগ পাবে। জীবন-যাপনের মৌলিক অধিকারগুলো পাবে মানুষ- এইগুলোই আসলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এই সুযোগ-সুবিধাগুলো যদি তৈরী হয়, মানুষ আসলেই পায়; তাহলেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়িত হবে।

গ্লিটজ : সামনের নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের দেশের কোনো মৌলিক পরিবর্তন আসবে? তবে সেটি কী ধরনের?
নূর : আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে অবশ্যই দেশের মৌলিক পরিবর্তন আসবে। ওয়ান ইলেভেনের পর আমরা যেটা লক্ষ্য করেছি- দেশের রাজনীতিতে বিগত পাঁচ বছরে যারা ছিলেন, তারা বিভিন্ন সময়ে দেশটাকে যেভাবে লুটপাট করেছেন, দুর্নীতি করেছেন, দেশের টাকা যেভাবে পাচার হয়েছে, যেভাবে দলীয়করণ হয়েছে, সন্ত্রাস বেড়েছে, যেভাবে জঙ্গীবাদের উত্থান হয়েছে- এগুলো আমাদের দেশের মানুষ উপলব্ধি করেছেন। এই প্রথমবারের মত কারা এই কাজগুলো করছে এবং কেন করছে আমরা জেনেছি। আর তারা যে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে বিশ্বাস করেন না তাও পরিষ্কার হয়েছে। সুতরাং এই শক্তিকে পরাজিত করলেই দেশে একটা মৌলিক পরিবর্তন আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

গ্লিটজ : মহাজোট ক্ষমতায় গেলে মন্ত্রী হওয়ার ব্যাপারে কতটা আশাবাদী?
নূর : এই ব্যাপারে আমি এখনো কোনো চিন্তা-ভাবনা করছি না। আমি নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। আমাদের মহাজোটের ক্ষমতায় যাওয়ার বিষয় আছে। আমি কোনো কিছুর প্রত্যাশা নিয়ে রাজনীতি করি না। আমি আমার আদর্শ, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, দলের আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে রাজনীতি করি।

গ্লিটজ : জেতার ব্যাপারে কতটা আশাবাদী?
নুর : কোন প্রার্থীই মনে করেন না যে, তিনি নির্বাচনে পরাজিত হবেন। সবাই-ই জয়ের জন্য নির্বাচন করেন। সবাই জয়ের প্রত্যাশাই করেন। আমাদের এলাকার যারা ভোটার, যারা সাধারণ মানুষ, আমি মনে করি, তারা অত্যন্ত সচেতন। তারা সচেতনভাবেই এমপি নির্বাচিত করবেন। আশা করি এক্ষেত্রে আমি জয়লাভ করব।


সুত্র - গ্লিটস/২২ ডিসেম্বর ২০০৮