12.4.09

Nova

দোয়া পড়ে বুকে ফুঁ দিয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াই: নোভা

Nova-004এবার থাকছে নবীন অভিনেত্রী নোভার বিশেষ সাক্ষাৎকার। নিয়েছেন মীর সামী।


এই প্রজন্মের অভিনেত্রী নোভার জীবনের কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য নেই। ফলে আইনজীবী হতে চাওয়া মেয়েটির অভিনেত্রী বনে যেতে কোনো সমস্যা হয় নি। আর বিয়ে করলে এমন ছেলেকেই করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন মীর সামীকে যে তাকে এবং তার পরিবারকে বুঝবে।


গেল বছরটা কেমন কাটলো?
'০৮ সাল ভালো- মন্দ মিলিয়ে কেটে গেল। নানা প্রতিষ্ঠান থেকে পাঁচটি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। আর কয়েকটি ভালো ভালো নাটকে অভিনয় করেছি।


নতুন বছরের কোনো পরিকল্পনা করেছেন?
আসলে আমি কোনোদিন পরিকল্পনা করে কোনো কাজ করিনি। ফলে এ বছরের জন্য আলাদা কোনো পরিকল্পনা নেই। যখন যেটা ভালো লাগে তাই করি।


গত বছরে নিজের উল্লেখযোগ্য কাজগুলো কি কি?
গেল বছর আমি বেশ কিছু ভালো কাজ করেছি বলে আমার ধারণা। এর সবগুলোর নাম এখন মনে পড়ছে না। তবে চয়নিকা চৌধুরীর 'বৈশাখNova-020 থেকে শ্রাবণ', 'তোমার জন্য' দীপংকর দীপনের 'স্বপ্নজাল', শাহরুখ শহীদের রচনা ও এস এ হক অলিকের পরিচালনায় 'নন্দিনী এবং অসমাপ্ত গল্প' আমার কাছে ভালো লেগেছে। এর বাইরে বাংলালিংক দেশ 'একটু নতুন করে দেখলেই হয়', 'প্যারাসুট' এবং 'তীর চিনি'- এই বিজ্ঞাপনগুলো করেছি।


ক্যারিয়ারের শুরু থেকে অনেক নামকরা অভিনেতা- অভিনেত্রীর সাথে কাজ করেছেন। তাদের সাথে কাজের অভিজ্ঞতা...?
আমার প্রথম নাটক ছিল 'প্রেম ও ঘামের গল্প'। এটা বানিয়েছিলেন অনিমেষ আইচ। এখানে আমার বিপরীতে অভিনয় করেছেন জাহিদ ভাই (জাহিদ হাসান)। আগে তার নাটকে দেখলেও এটাই তার সাথে আমার প্রথম কাজ। এতো বিখ্যাত একজন অভিনেতার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে আমি বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আর প্রথম যখন শট দিতে গিয়েছিলাম, আমার মনে আছে- আমি ভয়ে কাঁপছিলাম। জাহিদ ভাই ব্যাপারটা ধরতে পেরেছিলেন। এক সময় তিনি আমাকে কাছে ডেকে নিলেন। বললেন, "ভয় করছে খুব?" আমি মাথা নেড়ে জানালাম, কথা সত্য। তিনি তখন বললেন, "তুমি একটু দোয়া পড়ে বুকে ফুঁ দাও। এতে কাজ হয়ে যাবে।" এরপর তিনি আমাকে দোয়াটি শিখিয়ে দিলেন। আর আমি সেটা পড়ে বুকে ফুঁ দিয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালাম। শুরু করলাম। এখনো ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে গেলেই জাহিদ ভাইয়ের কথাটা মনে পড়ে। আর আমি সেই দোয়াটা পরে বুকে ফুঁ দিয়ে শুরু করি। দোয়াটা হলো- 'ইয়া মুকাদ্দিমু' আর 'লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি Nova-027কুন্তু মিনাজ জোয়ালেমিন'। আর নানা কাজের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সিনিয়র ভাইয়া, আপুদের কাছে থেকে নানা বিষয় সম্পর্কে জানতে পারি। এটা পরে অনেক কাজে লাগে।


এখন কি কি কাজ করছেন?
এখন কাজ করছি অরণ্য আনোয়ারের 'ঘোড়ার ডিম', ইফতেখার আহমেদ ফাহমী ও রেদওয়ান রনীর 'হাউজফুল', অরুণ চৌধুরীর 'গাইড ট্যুর' নাটকে। এর বাদেও এক পর্বের নাটকে তো অভিনয় করছিই।


একসঙ্গে এতোগুলো নাটকে কাজ করতে গিয়ে চরিত্র নিজের মধ্যে ধারণ করতে বা পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না?
আমি নিজের ক্ষমতা বুঝে একটি কাজে হাত দেই। ফলে কোনো সমস্যা হয় না। এখন পর্যন্ত যে কয়টি নাটকে অভিনয় করেছি তার সবগুলো চরিত্রই একটার চেয়ে আরেকটা। আর চরিত্রের মধ্যে ভিন্নতা না থাকলে কাজ করে কোন মজা পাওয়া যায় না। আর অমার মনে হয়, নাটকেরNova-013 প্রতিটি চরিত্রই একটা নিদিষ্ট সময়ের জন্য। আমারা আসলে এক রকমের মুখোশ পরে অভিনয় করি। যেটা খুললেই আসল চরিত্রটি বেরিয়ে আসবে।


কোন ধরনের নাটকে কাজ করে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন?
এমন কোনো বিষয়ে আমি বিশ্বাসী না।


গ্ল্যামারের আড়ালে কি অভিনয় চাপা পড়ে?
এটা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত একটা ধারণা। এই কথা আমি মানি না। আমার কাছে মনে হয় আগে অভিনয়, পরে গ্ল্যমার। তবে একথা ঠিক যে অভিনয়ের সাথে গ্ল্যামার থাকলে সেটা একটা প্লাস পয়েন্ট হয়।। যদি শুধু গ্ল্যমার দিয়ে কাজ করা যেত তাহলে এদেশে সুর্বণা- ফরিদীর মতো শিল্পীর জন্ম হতো না।


মিডিয়াতে কিভাবে এলেন?
আমার ক্যারিয়ারের প্রথম উল্লেখযোগ্য অর্জন 'ইউ গট দ্যা লুক' প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়া। এই কাজের মাধ্যমেই পরিচালকদের নজরে আসি। আর নিজের অভিনয় ক্যারিয়ারের শুরুতে কিছু ভালো কাজ করতে পেরেছি। হুমায়ূন আহমেদের গল্প থেকে অনিমেষ আইচের 'নিষাদ', ফেরদৌস হাসানের ডেইলি সোপ 'মহানগর', নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুলের 'নেলসন নাম্বার ১১১' ছাড়াও আমার প্রথম নাটক 'প্রেম ও ঘামের Nova-025গল্প'- আমার ক্যারিয়ারের ভিত শক্ত করেছে বলে আমি মনে করি। এখনো আমি প্রতিদিনই নিজেকে আরও বেশি সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করছি। আমাদের প্রকৃতি পরিবর্তনের মতো আমি নিজেকে নানা ভাবে পরিবর্তন করতে চাই। সেজন্য চেষ্টা করি সবসময় ভালো কাজের সাথে জড়াতে।


অভিনয়ে কাকে ফলো করেন?
সুবর্ণা মুস্তাফা , শমী কায়সার আর আফসানা মিমির অভিনয় এখনো আমার চোখে ভাসে। সেই ছোট বেলা থেকে এখনো মনে হয়, আহা, আমিও যদি তাদের মতো অভিনয় করতে পারতাম। তাদের দেখে মুলত আমার অভিনয় জগতে আশা। ফলে ওভাবে বলতে গেলে আমার কোন আইডল নেই।


ছোটবেলায় কি হতে চেয়েছিলেন?
ছোটবেলাতে একসময় ভাবতাম 'ল ইয়ার' হব। আবার আকাশ দিয়ে কোন বিমান উড়ে গেলে মনে হতো, পাইলট হয়ে আকাশে উড়ে বেড়াব। তবে এখন মনে হয়, জীবন একটি বহতা নদীর মতো। কোথায় গিয়ে কখন থামবে তা আমরা কেউই বলতে পারি না। তাই আসলে আমি জীবনে কী হবো সেটা বলা যাবে না বলেই এখন আমি মনে করি।


সিনেমায় অভিনয় করবেন?
এখনই আমি সিনেমা নিয়ে কোনোকিছু ভাবতে চাই না। কারণ এটা অনেক বড় মাধ্যম। যেখানে কাজ করতে গেলে অনেক কিছু শেখা লাগে আছে।


বিয়ে করবেন কবে?
বিয়েটা আসলে এখনই বলতে পারছি না। সব কিছু নির্ভর করছে ভাগ্যের ওপর। তবে বিয়ে করলে সবাইকে জানিয়ে, ঘটা করে করব।


পাত্র কেমন চান?
যে আমাকে এবং আমার পরিবারকে বুঝবে।


সুত্র - গ্লিটস/৭ ডিসেম্বর ২০০৮

No comments:

Post a Comment