9.4.09

Mithila

আপত্তি নেই সিনেমার নায়িকা হতে: মিথিলা

Mithila22a পাশের বাড়ির মেয়ে মিথিলা, আমাদের টিভি বিজ্ঞাপন ও নাটকের মিষ্টি মুখ। অভিনয়ে নতুন তবে অপরিচিত নন মোটেও। আর তাহসানের স্ত্রী হিসেবেও তার আলাদা পরিচিতি রয়েছে। মিষ্টি এই মেয়েটির ব্যাপারে অনেক কিছুই জানার আগ্রহ রয়েছে ভক্ত দর্শকদের। এবারের সাক্ষাৎকার সেই আগ্রহ মেটাতেই হাজির করা হলো। তার সঙ্গে কথা বলেছেন মীর সামী।


আপনার ছোটবেলা কিভাবে কেটেছে?
ছোটবেলায় আমি খুব গম্ভীর টাইপের ছিলাম। প্রথমে গানের স্কুল 'হিন্দোল' একাডেমিতে ভর্তি হই। এরপর লোক নাট্যদলের শিশুদের দলে নাটক করি। পরে বেনুকা ললিতকলা একাডেমীতে নাচ শিখি।...

মিডিয়ায় এলেন কীভাবে?
বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে। গান, নাচ এসব করতে করতেই একটি বিজ্ঞাপনে অভিনয় করে ফেলি। বিজ্ঞাপনের পর অনেকেই বলতে থাকেন, "আরে তুমিতো অনেক সুন্দর কাজ করো।" সেই উৎসাহেই এই জগতে কেরিয়ার করা। এরপর জুঁই নারকেল তেলের একটি বিজ্ঞাপন করি। এখানে আমার সাথে তাহসানও অভিনয় করে। এই বিজ্ঞাপনটি আমাকে বেশ পরিচিতি দিয়েছে।

নাটকে শুরুটা?
ঈদের একটি নাটকে অভিনয় করার কথা বলেন পরিচালক রেদওয়ান রনি। অনেক ভেবেচিন্তে ওর প্রস্তাবে রাজি হই। আমার অভিনীত প্রথম নাটক 'শুনছেন একজন রেডিও জকির গল্প'। নাটকে আমার বিপরীতে অভিনয় করেন হাসান মাসুদ আর রুপক তালুকদার। এই নাটকে অভিনয় করার পর আমি অনেক নাটকে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছি। নাটকে নিয়মিত হবো এমন কোন ইচ্ছা আমার ছিল না। আমি ভেবেছি যে, শুধু ঈদের জন্য তৈরি নাটকে অভিনয় করব। কিন্তু পরে শিহাব শাহীনের 'এক্স ফ্যাক্টর' নাটকে অভিনয় করি। এভাবেই আমার অভিনয়ে আসা। যখন দেখলাম অভিনয় করতে পারছি, আর দর্শক আমাকে গ্রহণ করছেন, তখন ভাবলাম হই না নাটকে নিয়মিত।

আপনার বেড়ে ওঠার যদি গল্প বলেন...।
আমার জন্ম গুলশানে। ২৫ মে তারিখে। আমার বাবা বজলুর রশীদ এবং মা শামসুর রশীদ। তিন বোন, এক ভাইয়ের মধ্যে আমিই সবার Mithila22fবড়। গুলশানে আমার দাদা বাড়ি। সেখানেই আমি বড় হয়েছি। এরপর বাবা চলে আসেন সিদ্ধেশ্বরীতে। এখানেই আমার শৈশব জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় দিনগুলো কেটেছে। আমার প্রথম স্কুল লিটলস জুয়েলস। এরপর ভর্তি হই ভিকারুননেসা স্কুল এন্ড কলেজে। এখানে ক্লাস ওয়ান থেকে ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত পড়েছি। খুবই মজার ছিল স্কুল-কলেজের দিনগুলো।

এখন আপনার ব্যস্ততা কেমন?
ইফতেখার ফাহমী ও রেদওয়ান রনির 'হাউজফুল', ফারিয়া হোসেনের রচনা এবং আরিফ খানের পরিচালনায় 'জলকন্যা'র কাজ করছি। জলকন্যা'য় আমি দীঘি নামের একটি চরিত্রে অভিনয় করছি। একটা ত্রিভূজ প্রেমের গল্প নিয়ে নাটকটি তৈরি হচ্ছে। এছাড়াও কোরবানী ঈদের কয়েকটি নাটকে অভিনয়ের কথাবার্তা চলছে।

আপনার প্রথম ধারাবাহিক 'হাউজফুল' প্রচারিত হচ্ছে। কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
এই নাটকের জন্য অনেক রেসপন্স পাচ্ছি। নাটকটি যেদিন প্রচার হয় সেদিন অনেকে আমাকে ফোন করে তাদের মতামত জানান।

ছোটবেলায় থিয়েটার করতেন। এখন করছেন না কেন?
ছোটবেলায় লোক নাট্যদলের শিশুদের দলের সদস্য ছিলাম। সেখানে একটি নাটকেও অভিনয় করেছি। এখন আসলে সময়ের অভাবে থিয়েটার করা হয়ে উঠে না। তবে থিয়েটারের প্রতি যে ভালোবাসাটা আমার ছিল সেটা থাকবে সবসময়।

একজন অভিনয় শিল্পীর থিয়েটার করাটা কতটা জরুরী?
আমি মনে করি, একজন অভিনয় শিল্পীর থিয়েটার করাটা অনেক জরুরী। কারণ অভিনয় শেখার প্রথম জায়গা থিয়েটার।

একজন নির্মাতা এবং অভিনয় শিল্পীর মধ্যে কেমন সম্পর্ক থাকা উচিত বলে আপনি মনে করেন?
অবশ্যই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। এর আগে বা পরে কোনকিছু নেই। একজন অভিনয় শিল্পীকে নির্মাতার প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। নির্মাতারও বুঝতে হবে শিল্পীর চরিত্রটি কী হবে, পর্দায় সেটি কিভাবে ফুটিয়ে তোলা যাবে। এই ব্যাপারটা তাদের দুজনের মধ্যে বোঝাপড়া হলেই হয়।

অভিনয়ের জন্য গ্ল্যামার কতোটা জরুরী?
অভিনয়ের জন্য গ্ল্যামার মোটেও দরকার নেই। অভিনয়ের জন্য গ্ল্যামার দরকার- একথা আমি কখনোই মেনে নিতে পারব না। আগে অবশ্যই Mithila22eঅভিনয় জানতে হবে। সেক্ষেত্রে গ্লামার থাকলে অবশ্যই সেটা হবে অভিনেতা-অভিনেত্রীর একটা প্লাস পয়েন্ট। খেয়াল করলে দেখবেন, যদি গ্ল্যামার থাকলেই ভালো অভিনয় করা যেত, তবে আমাদের দেশে অনেক ভালো অভিনেতা বা অভিনেত্রীর জন্ম হতো না।

টিভির অনেকেই এখন ছবিতে অভিনয় করছেন। আপনিও করবেন?
প্রথম কথা হল অভিনয় তো অভিনয়। সেটা টিভি বা ছবি যাই হোক না কেন। ভালো নির্মাতা এবং ভালো চিত্রনাট্য পেলে আপত্তি নেই সিনেমার নায়িকা হতে।

গান লিখেছেন। টিভি নাটক কিংবা উপন্যাস লিখবেন কবে?
গান লিখবো বা গাইবো সেটা কোনদিনই আমার ভাবনায়ও ছিলনা। মন চেয়েছে তাই গান লিখেছি, গেয়েছি। ফলে আপাতত বলতে পারছি না কবে নাটক, উপন্যাস লিখবো। তবে একদিন লিখেও ফেলতে পাড়ি।

নতুন অ্যালবামের কাজ কবে শুরু করবেন?
আগে তাহসান দেশে ফিরে আসুক। তারপর শুরু করব।

তাহসানের সাথে আপনার পরিচয় কিভাবে?
তখন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। আমাদের এক কমন ফ্রেন্ডের মাধ্যমে তাহসানের সাথে পরিচয় হয়। এক সময় আমাদের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া হয়। আমরা একসঙ্গে গল্প করতাম, ঘুরতাম। তারপর এক সময় আমরা আবিষ্কার করি যে, আমরা একে অপরকে ভালোবাসি। পরে দুই পরিবারের সম্মতি নিয়ে আমরা বিয়ে করি।

গায়ক তাহসান এবং স্বামী তাহসানের মধ্যে পার্থক্য কী?
Mithila_Tahsan গায়ক তাহসানকে আমার খুবই ভালো লাগে। আর স্বামী হিসেবে ও অনেক বেশি ভালো। এই যে এখন আমেরিকাতে আছে সেখান থেকেও প্রায় প্রতিদিনই ফোন করে খোঁজ-খবর নিচ্ছে।

ভবিষ্যৎ স্বপ্ন কী?
বাবা মায়ের প্রত্যাশা পূরণ করা এবং নিজেকে একজন অভিনেত্রী হিসেবে প্রকাশ করা।


ছবি তুলেছেন : আশীষ সেনগুপ্ত

সুত্র - গ্লিটস/২২ অক্টোবর ২০০৮

No comments:

Post a Comment